বিবরণ
-
মসজিদের ধরণসুন্নী
-
মসজিদের স্থাপিত সময়কাল১৬০৮
-
প্রত্নতত্ব বিষয় / ধরনঐতিহাসিক, মুঘল স্থাপনা
-
মসজিদের ওয়েবসাইটhttps://mosquesofbangladesh.xyz/
মসজিদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
আতিয়া মসজিদ বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ যা বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এই মসজিদটি ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছে এবং এখানে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছে।
টাঙ্গাইল অঞ্চলে প্রাপ্ত মূল শিলালিপিগুলোর মধ্যে আতিয়া জামে মসজিদ এলাকায় প্রাপ্ত একটি আরবি এবং একটি ফার্সি শিলালিপি রয়েছে, তবে এগুলোতে মসজিদের নির্মাণকাল সম্পর্কিত তথ্যের ক্ষেত্রে কিছুটা অসংগতি পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত শিলালিপিটিতে নির্মাণকাল ১০১৯ হিজরি (১৬১০-১১ খ্রি.) দেয়া হলেও কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথের উপর স্থাপিত অপর শিলালিপিতে এর নির্মাণকাল ১০১৮ হিজরি (১৬০৮-৯ খ্রি.)উল্লেখ করা হয়েছে।
ইতিহাস
আরবি ‘আতা’ থেকে ‘আতিয়া’ শব্দটির উৎপত্তি, যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল ‘দান কৃত’। আলি শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরী (র.) কে সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ টাঙ্গাইল জেলার জায়গিরদার নিয়োগ দান করলে তিনি এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেন; সে সময় তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারের এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য আফগান নিবাসী কররানী শাসক সোলাইমান কররানীর কাছ থেকে সংলগ্ন এলাকা দান বা ওয়াকফ্ হিসাবে লাভ করেন। এবং এই এলাকাটি তাঁকে দান করায় এই অঞ্চলটির নাম হয়েছে ‘আতিয়া’।
পরবর্তীতে বাবা আদম কাশ্মিরীর পরামর্শক্রমে সাঈদ খান পন্নী নামক সুফিজির এক ভক্তকে মোগল সম্রাট জাহাঙ্গির উক্ত আতিয়া পরগণার শাসন কর্তা হিসেবে নিয়োগ দান করেন। এই সাঈদ খান পন্নীই ১৬০৮ সালে বাবা আদম কাশ্মিরীর কবরের সন্নিকটে আতিয়া মসজিদ নির্মাণ করেন।
মুহাম্মদ খাঁ নামক তৎকালীন এক প্রখ্যাত স্থপতি এই মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। রওশন খাতুন চৌধুরাণী ১৮৩৭ সালে এবং আবুল আহমেদ খান গজনবী ১৯০৯ সালে মসজিদটির সংস্কার করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার এই মসজিদটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে অধিগ্রহণ করেন।
বিবরণ
লাল ইট দ্বারা নির্মিত এই মসজিদটি আকারে বেশ ছোট, মাত্র ১৮.২৯ মিটার (৫৯ ফুট) x ১২.১৯ মিটার (৪০ ফুট) এবং দেয়ালের পুরুত্ব ২.২৩ মিটার (সাড়ে ৭ ফুট)।
এর চারকোণে ৪টি অষ্টকোণাকৃতীর মিনার রয়েছে, যার উপরের অংশটি ছোট গম্বুজের আকৃতি ধারণ করেছে।
সুলতানি ও মুঘল—এই দুই আমলেরই স্থাপত্যরীতির সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে এই মসজিদের নির্মাণ শৈলীতে।